**ভূমিকা**
মহারণা প্রতাপ জয়ন্তী হল রাজস্থানের মহান রাজপুত যোদ্ধা মহারণা প্রতাপের জন্মদিন উদযাপন। ২০২৫ সালে, এই দিনটি বিশেষ ভাবে পালিত হবে, কারণ এটি ভারতের ইতিহাসে এক অমর বীরের স্মরণের দিন। এই ব্লগে, আমরা মহারণা প্রতাপের জীবন, তাঁর সংগ্রাম, বীরত্ব, এবং তাঁর উত্তরাধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
**মহারণা প্রতাপ কে ছিলেন?**
মহারণা প্রতাপ (১৫৪০-১৫৯৭) ছিলেন মেবারের সিসোদিয়া রাজপুত বংশের রাজা। তিনি মোগল সম্রাট আকবরের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীনতা রক্ষার জন্য বিখ্যাত। হাল্দিঘাটির যুদ্ধে তাঁর বীরত্ব তাঁকে ভারতের ইতিহাসে এক অমর স্থান দিয়েছে।
**মহারণা প্রতাপ জয়ন্তী ২০২৫ তারিখ**
২০২৫ সালে, মহারণা প্রতাপ জয়ন্তী **৯ই জুন, সোমবার** পালিত হবে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, এটি জ্যৈষ্ঠ মাসের তৃতীয় দিন (জ্যৈষ্ঠ শুক্ল তৃতীয়া) পালন করা হয়।
**মহারণা প্রতাপের শৈশব ও শিক্ষা**
মহারণা প্রতাপের জন্ম **১৫৪০ সালে** রাজস্থানের কুম্ভলগড় দুর্গে। তাঁর পিতা ছিলেন মহারাজা উদয় সিংহ এবং মাতা রাণী জয়ন্তীবাই। ছোটবেলা থেকেই প্রতাপ যুদ্ধবিদ্যা, অশ্বারোহণ ও রাজনীতিতে দক্ষতা অর্জন করেন।
**মহারাণা প্রতাপের রাজ্যাভিষেক**
১৫৭২ সালে, তাঁর পিতা উদয় সিংহের মৃত্যুর পর, মহারণা প্রতাপ মেবারের সিংহাসনে বসেন। কিন্তু মোগল সম্রাট আকবর চেয়েছিলেন প্রতাপকে তাঁর আধিপত্য স্বীকার করাতে। প্রতাপ কখনও মোগলদের কাছে মাথা নত করেননি।
**হাল্দিঘাটির যুদ্ধ (১৫৭৬)**
মহারণা প্রতাপের জীবনের সবচেয়ে বিখ্যাত যুদ্ধ হল **হাল্দিঘাটির যুদ্ধ**। এই যুদ্ধে তিনি মোগল সেনাপতি মান সিংহের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। যদিও সংখ্যায় কম থাকা সত্ত্বেও, প্রতাপের বীরত্ব ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। তাঁর প্রিয় ঘোড়া **চেতক** এই যুদ্ধে প্রাণ দেয়।
**মহারণা প্রতাপের সংগ্রাম ও ত্যাগ**
মোগলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে প্রতাপকে জঙ্গলে কঠিন জীবনযাপন করতে হয়েছিল। কথিত আছে যে, তিনি ঘাসের রুটিও খেয়েছেন, কিন্তু মোগলদের অধীনতা স্বীকার করেননি।
**মহারণা প্রতাপের পরিবার**
মহারণা প্রতাপের **১১টি স্ত্রী** এবং **১৭টি সন্তান** ছিল। তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র অমর সিংহ পরবর্তীতে মেবারের রাজা হন।
**মহারণা প্রতাপের মৃত্যু**
১৫৯৭ সালে, **৫৭ বছর** বয়সে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মহারণা প্রতাপের মৃত্যু হয়। তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল মেবারকে মোগলমুক্ত করা, যা তাঁর পুত্র অমর সিংহ পূরণ করেন।
**মহারণা প্রতাপ জয়ন্তী উদযাপন**
মহারণা প্রতাপ জয়ন্তীতে রাজস্থানে বড় আয়োজন করা হয়।
- **শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান**
- **যুদ্ধের পুনরাভিনয়**
- **বিদ্যালয় ও কলেজে বক্তৃতা**
- **মন্দিরে বিশেষ পূজা**
**মহারণা প্রতাপের বাণী**
> **"মেবারের মাটি আমার মা, আমি কখনও বিদেশীদের কাছে মাথা নত করব না।"**
**মহারণা প্রতাপের উত্তরাধিকার**
মহারণা প্রতাপ শুধু একজন যোদ্ধাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন স্বাধীনতার প্রতীক। আজও ভারতীয় সেনাবাহিনী ও যুবসমাজ তাঁকে শ্রদ্ধা জানায়।
**উপসংহার**
মহারণা প্রতাপ জয়ন্তী শুধু একটি উৎসব নয়, এটি দেশপ্রেম ও সাহসের শিক্ষা দেয়। ২০২৫ সালে, আসুন আমরা এই মহান বীরকে স্মরণ করি এবং তাঁর আদর্শ অনুসরণ করি।
**জয় মহারণা প্রতাপ!**
আমরা মহারণা প্রতাপের জীবন, সংগ্রাম ও তাঁর জয়ন্তী উদযাপন সম্পর্কে জানলাম। এই মহান বীরের গল্প চিরকাল ভারতবাসীকে অনুপ্রাণিত করবে।