**ভূমিধসের তাণ্ডব: উত্তর সিকিমের সংকট**
গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তর সিকিমের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে **লাচেন ও চুংথাং** এলাকায় পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। রাস্তা, ব্রিজ ও ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় প্রশাসন জরুরি অবস্থা জারি করেছে। এই দুর্যোগে **২৫০০-এর বেশি পর্যটক** আটকা পড়েছেন, যাদের উদ্ধার কার্যক্রম চলছে।
**পর্যটকদের জন্য লাচেন-চুংথাং পারমিট বাতিল**
উত্তর সিকিমের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র **লাচেন ও চুংথাং** এ যেতে আগে থেকে অনুমতি নিতে হতো। কিন্তু ভূমিধসের কারণে এই পারমিট সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নতুন পর্যটকদের এই অঞ্চলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার
*(এনডিআরএফ ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্ধার তৎপরতা)*
**আটকে পড়া পর্যটকদের অবস্থা**
ভূমিধসের ফলে **গ্যাংটক-লাচেন-চুংথাং সড়ক** সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এই রুটে থাকা পর্যটকরা ফেরত যেতে পারছেন না। স্থানীয় হোটেল ও গেস্টহাউসে তাদের সাময়িক থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় অনেকেই পরিবারের সঙ্গে করতে পারছেন না।
**এনডিআরএফ, সিকিম পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল** মিলে উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে অসুস্থ ও বয়স্ক পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
**ভূমিধসের প্রধান কারণ**
বিশেষজ্ঞদের মতে, **অতিবৃষ্টি, বনভূমি উজাড় ও অপরিকল্পিত নির্মাণ** এই বিপর্যয়ের মূল কারণ। সিকিমের পাহাড়ি অঞ্চল ভূতাত্ত্বিকভাবে অস্থিতিশীল, যেখানে মাটির স্তর দুর্বল। বৃষ্টির পানিতে পাহাড়ের মাটি সরে গিয়ে ভূমিধসের সৃষ্টি করে।
*(পাহাড় কাটার ফলে মাটির স্থিতিশীলতা কমে যায়)*
**স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ**
শুধু পর্যটক নয়, স্থানীয়রাও এই দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেকের বাড়িঘর ধসে গেছে, ফসল নষ্ট হয়েছে। সরকার ত্রাণ তৎপরতা চালালেও দুর্গম এলাকায় সাহায্য পৌঁছানো এখনো চ্যালেঞ্জিং।
**পর্যটকদের জন্য সতর্কতা**
1. **যারা সিকিম ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন**, তারা আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও প্রশাসনের নির্দেশিকা মেনে চলুন।
2. **ভূমিধসপ্রবণ এলাকায় ভ্রমণ করলে** স্থানীয় গাইডের সহায়তা নিন।
3. **জরুরি যোগাযোগ নম্বর** (এনডিআরফ, পুলিশ) হাতের কাছে রাখুন।
**উপসংহার**
প্রকৃতির রোষ থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন, কিন্তু সচেতনতা ও দ্রুত পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। উত্তর সিকিমের এই সংকটে সরকার, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আশা করা যায়, শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং আটকে পড়া পর্যটকরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবেন।