পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের উপর ভারতের ব্রহ্মস-এর মতো উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্রুজ মিসাইল হামলা হলে কী হতে পারে—এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও জটিল প্রশ্ন। আসুন ধাপে ধাপে সম্ভাব্য পরিণতি বিশ্লেষণ করি:
১. **প্রাথমিক বিস্ফোরণ ও ধ্বংসযজ্ঞ**
- ব্রহ্মস মিসাইলের গতিবেগ (ম্যাক ৩+) এবং ২০০-৩০০ কেজি ওজনের ওয়ারহেড পারমাণবিক স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিকে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
- যদি পারমাণবিক অস্ত্রের ডিটোনেশন না হয়, তবুও মিসাইলের আঘাতে অস্ত্রভাণ্ডারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে রেডিওঅ্যাকটিভ পদার্থ ছড়িয়ে পড়তে পারে (যেমন প্লুটোনিয়াম/ইউরেনিয়াম লিক)।
২. **পারমাণবিক দুর্ঘটনার ঝুঁকি**
- পারমাণবিক অস্ত্রের "ডিজাইনেটেড সুরক্ষা" থাকলেও, সরাসরি আঘাতে **অনিচ্ছাকৃত বিস্ফোরণ** (Nuclear Yield) হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম—তবে শূন্য নয়।
- ১৯৮০-এর দশকে মার্কিন গবেষণায় দেখা গেছে, পারমাণবিক অস্ত্রে আগুন লাগলে **পারমাণবিক বিস্ফোরণ ছাড়াই** রেডিওঅ্যাকটিভ বৃষ্টি (Fallout) হতে পারে।
৩. **রণকৌশলগত প্রতিক্রিয়া**
- পাকিস্তান **"ফার্স্ট ইউজ" নীতি** অনুসরণ করে, অর্থাৎ তাদের প্রচলিত বাহিনী পরাজয়ের আশঙ্কায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।
- এমন হামলাকে তারা **"ডেকাপিটেশন স্ট্রাইক"** (নেতৃত্ব ধ্বংসের চেষ্টা) হিসাবে ব্যাখ্যা করে পাল্টা হামলা চালাতে পারে।
৪. **পরিবেশগত বিপর্যয়**
- রেডিওঅ্যাকটিভ উপাদান ছড়িয়ে পড়লে **তাত্ক্ষণিক মৃত্যু** থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদী ক্যান্সার, ভূমি দূষণ হবে। লাহোর-ইসলামাবাদ-কারাচির মতো শহরও প্রভাবিত হতে পারে।
৫. **আন্তর্জাতিক প্রভাব**
- এমন ঘটনাকে **"নিউক্লিয়ার টেররিজম"** হিসেবে দেখা হবে, সম্ভবত UNSC জরুরি বৈঠক ডাকবে।
- চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হতে পারে।
উপসংহার
এ ধরনের হামলা শুধু পাকিস্তান-ইন্ডিয়াকে নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াকে একটি **পরমাণু যুদ্ধের দিকে** ঠেলে দিতে পারে। এটি কোনো পক্ষের জয় নয়—একটি অস্তিত্বসংকট তৈরি করবে।